ওয়াহিদ মুরাদ, খুলনা ব্যুরো চিফ —সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া ১৯ মার্চ মঙ্গলবার খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা ঘুরে গেলেন। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া জলবায়ুপরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও সুইডেন সরকারের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন পরিচালিত লজিক প্রকল্পের আওতায় নির্মিত রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম পরিদর্শন করেন। এর পূর্বে তিনি সকাল আটটায় কয়রার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের গিলাবাড়ী পান্ডুগাজী ইউনাইটেড একাডেমির মাঠে হেলিকপ্টারে অবতরণ করেন। এ সময় ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়াকে কয়রায় স্বাগত জানান খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান, খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ও কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বি. এম. তারিক-উজ-জামান।হেলিকপ্টার থেকে অবতরণের পর তিনি তিন কিলোমিটার দূরে সড়কপথে সুন্দরবন তীরবর্তী নয়ানী গ্রামে যান। সেখানে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ও সুইডেনের সহায়তায় নির্মিত বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পানি শোধনাগার থেকে স্থানীয়দের পানি সংগ্রহ কার্যক্রম দেখেন। তিনি উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় লোকজনের জীবনমান নিজ চোখে দেখেন, লিঙ্গসমতা, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তর কার্যক্রম পরিদর্শন ও মদিনাবাদ স্মার্ট পোস্ট সেন্টারের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের অনুভূতি শুনেন ও জীবন জীবিকা কার্যক্রম অবলোকন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় মানুষের সঙ্গে গল্প করেন, এক নারীর মাছ ধরা দেখেন, তাঁদের সঙ্গে ছবিও তোলেন। উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। নারীদের কাছে তিনি জানতে চান, জলবায়ু পরিবর্তন তাঁদের জীবনে কী প্রভাব ফেলেছে। কী ধরনের চ্যালেঞ্জ তাঁদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এরপর ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া একই ইউনিয়নের সুন্দরবনসংলগ্ন শিকারী বাড়ি গ্রামে যান। সেখানে ইউএনডিপি ও ইউএনসিডিএফের সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে করা বিভিন্ন কার্যক্রম দেখেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের শিকার হয়েও লড়াই করে যাওয়া স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শিকারী বাড়ি গ্রামের জোসনা খাতুন, কাকুলি আক্তার, হালিমা বেগম ও আকলিমা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প তাঁকে বিস্মিত করে। এ সময় স্থানীয় এক নারী নিজেদের পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরে দেখান রাজকন্যাকে। রাজকন্যা বেশ কিছুটা সময় তাঁদের সঙ্গে কাটান এবং তাঁদের সঙ্গে ছবি তোলেন। ক্রাউন প্রিন্সেসের সফরকালে সুইডেনের Minister for International Development Cooperation and Foreign Trade Mr. Johan Forssell, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তাঁর সাথে ছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টায় প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামের উদ্দেশে কয়রা ত্যাগ করেন।